জ্যৈষ্ঠের ঝড় হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি, আর বিদায় নিয়েছিলেন নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসা শরতের দিনে। কিন্তু অনন্তকালের জন্য মানুষের মনে তিনি স্থান করে নিয়েছেন চির বিদ্রোহী অসাম্প্রদায়িক মানুষ রূপে। বাংলাদেশে তিনি অভিষিক্ত হয়েছেন জাতীয় কবির মর্যাদায়।

ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন-শোষণ থেকে উপমহাদেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলনে, বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নজরুলের কবিতা ও গান ছিল অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট)  তার ৪৫তম প্রয়াণ দিবস।

রবীন্দ্রোত্তর সাহিত্যে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি তাঁর কবিতায়, গানে, উপন্যাসে পরাধীন ভারতে বিশেষ করে অবিভক্ত বাংলায় সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে আজীবন সোচ্চার ছিলেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর গান ও কবিতা সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে মুক্তিকামী মানুষকে। 

দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হয়েও কবি কখনো আপস করেননি। মাথা নত করেননি লোভ-লালসা, খ্যাতি, অর্থ, বিত্তবৈভবের কাছে। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য। মানবতার মুক্তির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। মুক্তবুদ্ধি ও চিন্তার পক্ষে কলম ধরেছেন নির্ভীক চিত্তে। তাঁর রচিত ‘চল্ চল্ চল্’ গানটি আমাদের রণসংগীত।