লাইফস্টাইল ডেস্কঃ  

পুরান ঢাকার খাবারের বাংলাদেশের খাদ্য সংস্কৃতিতে আলাদা একটি স্থান আছে। ডালরুটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী একটি খাবারের নাম। তবে এখন বিভিন্ন কারণে ঢাকার আদি খাবারগুলোর মধ্যে এটি টিকে আছে কোনোভাবে।

পুরান ঢাকার মানুষ মনে করেন, বিকেলের নাশতায় নানা রকম তেলে ভাজা খাবারের চেয়ে এটি ভালো এবং মুখরোচক। তাই এটি ছিল ঢাকাবাসীর জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে একটি। লোকমুখে জানা যায়, সেই ব্রিটিশ আমল থেকে পুরান ঢাকায় এই ডালরুটি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এটি তেল ছাড়া তৈরি বিশেষ একধরনের রুটি। একসময় এ রুটির এতটাই কদর ছিল যে পুরান ঢাকার মানুষ বিকেলের নাশতা হিসেবে এটি খেতে পছন্দ করতেন। তবে এখন কালের বিবর্তনে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকা থেকে স্বাস্থ্যকর এই খাবার হারাতে বসেছে।

কয়েক বছর আগেও পুরান ঢাকার অনেক এলাকায় এ রুটির দেখা মিলত। তবে এখন মাত্র অল্প কিছু জায়গায় ডালরুটির দোকান বসে। নগরীর রায়সাহেবের বাজার, জিন্দাবাহার, নয়াবাজার, কসাইটুলি, বংশাল, আগামসি লেন, নারিন্দা, সূত্রাপুরসহ কয়েকটি এলাকায় পাওয়া যায় ডালরুটি। এসব এলাকায় পিঠা ব্যবসায়ীরা কয়েক পুরুষ ধরে এটি তৈরি করে আসছেন। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পিঠা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলো ডালরুটি বানানো ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব পরিবার থেকে আর নতুন করে ছেলেমেয়েরা চাইছে না রাস্তায় বসে এই ডালরুটি বিক্রির ব্যবসায় আসতে।


পুরান ঢাকার মানুষ ছাড়া অনেকেই চেনে না এই খাবার। এলাকাবাসীর মধ্যে শীতের সময় প্রতিদিন ৬০–৭০টি বিক্রি করা গেলেও গরমের সময় তা নেমে ২০টিতে দাঁড়ায়।

আকারে কিছুটা ছোট, বড় হলেও প্রতিটি রুটি এখন বিক্রি হয় ১০ টাকা করে। যাঁদের জন্য তৈলাক্ত খাবার খাওয়া একেবারে নিষেধ, তাঁদের জন্য ডালরুটি খুব ভালো খাবার হিসেবে পরিচিত দীর্ঘদিন ধরে। তাই শ্রমজীবি মধ্যবিত্ত নিম্নআয়ের মানুষের কাছে এই ডাল রুটি এখনো অনেক প্রিয় খাবার।