⚫ আমিনুল ইসলাম, ব্যুর প্রধান, ফরিদপুর:

ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিসে টাকা তুলতে আসা বয়স্ক লোকদের টার্গেট করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো একটি চক্র। ১৭ বছর ধরে এভাবে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসা এমন একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। চক্রের অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতার দুইজন হলেন- খুলনার হরিণটানা উপজেলার গোলাডাঙ্গা গ্রামের ফারুক শেখ (৬১) ও মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পূর্বকোলা গ্রামের মো. আলী (৪৬)। বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা।

তিনি বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারী ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার বিল মাহমুদপুর এলাকার মো. নজরুল ইসলাম তার প্রয়াত বাবার পেনশনের ২০ লাখ টাকা ডাকঘর থেকে তুলে স য়পত্রে জমা রাখার উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকের কোর্ট বিল্ডিং শাখায় যান। সেখানে ব্যাংকের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে তার টাকার ব্যাগটি চুরি হয়ে যায়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় মো. নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে থানার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম হাসান তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এই ঘটনায় তিন চোরকে শনাক্ত করেন। এরপর খুলনা থেকে মো. ফারুক শেখকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক বরিশাল থেকে মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোট ১৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। চক্রের আর ও দুই সদস্য এখনো পলাতক রয়েছে।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি করে। মূলত তারা পোস্ট অফিস ও সরকারি ব্যাংকে বয়স্ক লোকদের টার্গেট করে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধে গাইবান্ধা জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম হাসান উপস্থিত ছিলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম হাসান বলেন, বুধবার বিকেলে ২০ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ফারুক শেখ ও মোহাম্মদ আলী ফরিদপুরের এক নম্বর আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিকুল রহমানের কাছে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।