গাইবান্ধায় গাছে গাছে সবুজ ও হালকা লাল পাতার মুখে উঁকি দিচ্ছে লিচুর মুকুল। মৌমাছিরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছে মধু সংগ্রহে। গ্রামগঞ্জের রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানের গাছে থোকায় থোকায় দুলছে লিচুর এ সোনালি মুকুল।
এযেনো টসটসে রসালো মেহমাদারীর আগাম বার্তা।
রবিবার (২৮ মার্চ) গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি ও গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম ও রাস্তা-ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, বাগান সহ বসতবাড়ি রাস্তার লিচু গাছগুলো যেন মুকুলের সমাহার। দেখে যেন মনে হয় নববধুর সোনারাঙা নাকফুল। সেই মুকুল আবার সুবাস ছড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে। প্রতিটি লিচু গাছ ভরে গেছে ফুলে ফুলে। এই জেলার প্রতিটি গ্রাম যেন লিচুর রাজ্যে পরিণত হতে যাচ্ছে। যে দিকে তাকাই সেদিকে গাছে গাছে শুধু দৃশ্যমান লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।
ঋতুরাজ বসন্তের শেষ প্রান্তে যেনো গ্রীষ্মকাল আসি আসি করে ঊঁকি দিচ্ছে। প্রকৃতি সেজেছে আপন মনে। ফাগুনের ছোঁয়ায় ফুটেছে পলাশ শিমুল ফুল, বন-জঙ্গলে লেগেছে আগুন রাঙা ফুলের মেলা। রঙিন বনফুলে সমারোহ প্রকৃতি যেন সেজেছে বর্ণিল সাজে।
ফল বৃক্ষের যৌবনবতী রূপ যেন ঠিকরে বেরুচ্ছে। মুকুলের মৌ-মৌ সুবাসে ভরে উঠেছে আকাশ বাতাস। গাছে গাছে সোনালী মুকুল যেনো নব বধুর ন্যায় শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়।
সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর গ্রামের লিচু চাষি আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় চার বিঘা জমিতে আমার একটি বাগান রয়েছে। এই বাগানে উন্নত বিভিন্ন আম, জাম, বরই সহ লিচু গাছ রয়েছে। তবে লিচুর পরিমান বেশি।
প্রতি বছর আমার বাগান থেকে অনেক লিচুর ফলন পেয়ে থাকি। আমার বাগানে চায়না থ্রী ও বোম্বে জাতের লিচুর গাছ আছে। এবার প্রতিটি গাছে পর্যাপ্ত মুকুল ধরেছে। অনেক মুকুল ফুটে গুটি গুটি লিচুতে রূপ নিতে শুরু করেছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্প্রে ব্যবহার শুরু করেছি। আশা করছি গত বছরের চেয়ে এবারের লিচুর বাম্পার ফলন পাবো।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মতিউল আলম বলেন, এবারে উপজেলায় বেশ কিছু জমিতে লিচুর চাষ হচ্ছে। এছাড়াও বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট সহ বিভিন্ন স্থানে লিচুর গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রচুর লিচুর মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে প্রতিটি গাছে লিচুর প্রচুর ফলন আসবে। আমরা প্রতিটি লিচু বাগান মালিককে ও গাছয়ালাদের বিভিন্ন ভাবে সেবা দিয়ে আসছি। উপজেলার লিচু চাহিদা পূরণে আমাদের এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।