পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হবে আগামীকাল। সেতুটি দিয়ে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে দেশের প্রধান ১০টি মহাসড়কের ৯টিই ফেরি পারাপারের ভোগান্তিমুক্ত হবে (ঢাকা থেকে পাটুরিয়া হয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত বাদে)। দেশের যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত নিয়ে আসবে পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু চালু হলে ফেরি পারাপারের ভোগান্তি থাকবে না দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের জেলা সিলেটের জাফলং থেকে খুলনায় যাতায়াতের ক্ষেত্রেও। এই পথের দূরত্ব প্রায় ৫৬৫ কিলোমিটার।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে একে একে সেতু হয়েছে। মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়েছে। পণ্য পরিবহন গতি পেয়েছে। বড় বাধা ছিল পদ্মা পারাপার। এই নদী পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলায় যাতায়াতে ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো মানুষকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা করেছেন, তৃতীয় বিশ্বের আর কোনো দেশের নেতাই তা করে দেখানোর সাহস পাননি। সব দুঃখ-কষ্টকে পেছনে ফেলে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রমাণ করেছেন যে বিশ্বকে চমকে দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারে বাংলাদেশ।
শুধু দেশেই নয়, বিশ্বেও একাধিক রেকর্ড গড়েছে বাঙালি জাতির গর্ব ও আত্ম-অহংকারের প্রতীক পদ্মা সেতু।
নদীর তলদেশে তিন মিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে মাটির ১২২ মিটার গভীরে পাইল বসানো ছিল এই সেতু নির্মাণের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ, যা এখন রেকর্ড। এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্য কোথাও আর কোনো সেতুতে এত গভীরে পাইল বসাতে হয়নি।
এ ছাড়া পিলারের ওপর বসানো হয়েছে ১০ হাজার ৫০০ টন সহনশীল বেয়ারিং, যা আরেক বিশ্ব রেকর্ড। এর ফলে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও বুক উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে গর্বের পদ্মা সেতু।
আবার রেকর্ড পরিমাণ নদী শাসন করেই বাগে আনতে হয়েছে প্রমত্তা পদ্মাকে। নদীর পাড় ভাঙনের কারণে সেতুটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ কিলোমিটার (মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার) এলাকা নদীশাসনের আওতায় আনা হয়েছে।