নোয়াখালীর হাতিয়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের পাশ থেকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় এক ৫ বছর বয়সী শিশুকে। ওই শিশুর নাম আদনান আমিন। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় শিশুটি কান্না শুরু করলে মুখ চেপে ধরা হয়। আর তাতেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। পরে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৮ জুন) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা।
নিহত আদনান আমিন ওই গ্রামের মো. হকলালের ছেলে। তার মা হাসিনা আক্তার বর্তমানে বাবার বাড়িতে থাকেন। হাসিনার সাবেক স্বামী জামাল হোসেন (৩০) এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। তিনি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ ঘটনায় পাখি বেগম (২৭) নামে এক নারীকে জামালের সহযোগী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বাসিন্দা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আব্দুল বারী জানান, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে জামাল ও তাঁর সঙ্গে থাকা পাখি নামের ওই নারী হাতিয়ায় আসেন। তাঁরা স্থানীয় একজনের সহযোগিতা নেন। কয়েক দিন তাঁরা সেই সহযোগীর বাড়িতে অবস্থান করেন। সুযোগ বুঝে ৩ জুন রাতে তাঁরা হাসিনার ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করেন। হাসিনা বেগম নিহত শিশুর বাবার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত জামালের সঙ্গে সংসার করে আসছিলেন। কিছুদিন আগ থেকে জামালের সঙ্গেও তাঁর মনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে হাসিনা তাঁকে ছেড়ে শিশুটিকে নিয়ে বাবার বাড়ি হাতিয়ায় চলে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল তাঁর সহযোগী পাখি নামের ওই নারীকে নিয়ে হাসিনার ক্ষতি করার এই পরিকল্পনা করেন। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জামাল নিজে এসব স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
হত্যার পরদিন জামাল হাসিনাকে ফোন করে জানান, শিশুটি তার কাছেই আছে। হাসিনা আবার তাঁর কাছে ফিরে গেলে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হবে—এমন শর্ত দেন তিনি। বিষয়টি জানিয়ে হাসিনা হাতিয়া থানায় অভিযোগ করেন। পরদিন বাড়ির পাশের ডোবা থেকে পাওয়া যায় আদনানের মরদেহ।
পুলিশ ও র্যাব প্রযুক্তির সহায়তায় কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জামাল ও পাখিকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত স্বীকার করেন জামাল।