বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি;
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একবছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী আদর্শের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করেন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইউট্যাব) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা। এসময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও জিয়া পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১১আগস্ট) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোড থেকে এই বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই জায়গায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হোন তারা।
এসময় রাবি শাখা ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বাবুর সঞ্চালনায় ইউট্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না, এদেশ স্বাধীন হয়েছে ১৯৭১ সালে। ২০২৪ এ আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি। যে বৈষম্যের কারণে এই আন্দোলন হয়েছিল, সেই বৈষম্য এখনো বন্ধ হয়নি। আজ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন, বিপ্লবের এক বছর পার হলেও এখনো তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়নি। গত ১৬ বছর অত্যাচার, হামলা-মামলা সহ্য করে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। এইটা আমরা করেছি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। যাতে জনগণ ভোট দিতে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
ইউট্যাবের সদস্য ও জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিজয় র্যালিতে সাধারণত আনন্দ হয়। কিন্তু আমরা আজ ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করছি। একজন শিক্ষক হিসেবে আমরা জুলাই শহীদদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এক বছর হয়ে গেল, আমাদের উচিত ছিল তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা কিন্তু সেই সময় কিছু জাতীয় নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠছেন। যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, যারা অন্ধ হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তারা সমুদ্র সৈকতে আনন্দ করছেন। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে যা হয়, আমরা তার প্রমাণ পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে একটি জবাবদিহিমূলক সরকারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। আমরা প্রদীপের আলো দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু সেই আলো বড় পরিসরে আমাদের সামনে আসেনি। আগামী ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশী-বিদেশী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদেরকে হয়তো আবার রাস্তায় নামতে হতে পারে।
ইউট্যাব রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাবু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দ্বারা এদেশের জনগণ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না, ছিলো না আমাদের জীবনের নিরাপত্তা, ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না। দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে রাখা হয়েছিল। গত জুলাই আন্দোলনের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা স্বৈরাচার মুক্ত করেছি।
তিনি আরো বলেন, নব্য যারা ফ্যাসিস্ট তারা শেখ হাসিনার মতো সেই ব্যবস্থা পুনরাবৃত্তি করতে চায়, তাদেরকে সহযোগিতা করছে একটি গুপ্ত বাহিনী ও তাদের সহযোগী সংগঠন। তাদেরকে আমরা বলতে চাই, যতোই ষড়যন্ত্র করেন কোনো লাভ হবে না। জাতীয়তাবাদী শক্তি গত ১৭ বছর সংগ্রাম করেছে আগামী দিনেও রাজপথে গিয়ে সকল দাবি আদায় করে, একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।
ইউট্যাব রাবি শাখার সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. খালেদউজ্জামান মিজানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি জিএম শফিউর রহমান ও আব্দুল আলিম, রাবি শাখা ইউট্যাবের সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম, অধ্যাপক হিরা সোবহান, অধ্যাপক গোলাম সাদিক, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, প্রফেসর নুরুজ্জামান হক, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, নাঈম ফারুকী লুথার, স্বপ্নীল রহমান, ড. সাবিনা সুলতানা। এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।