বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি:
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)-এর শিক্ষা ক্যাডারে স্বতন্ত্র কোডে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই মানববন্ধন করেন তারা।
এসময়, ‘প্রশাসনিক শিক্ষার হাত ধরে, দেশ গড়বো নতুন করে’, ‘যোগ্যতা আছে প্রাপ্যতা নাই, লোকপ্রশাসনে অধিকার চাই’, ‘লোকপ্রশাসনে শিক্ষা ক্যাডার, দাবি নয় অধিকার’, ‘শিক্ষার সাথে লোকপ্রশাসন, নাগরিক হোক সচেতন’, ‘লোকপ্রশাসন শিক্ষা উন্নতির দীক্ষা’সহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাদেরকে মানববন্ধনে দেখা যায়।
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, “দেশের প্রশাসন যত স্বচ্ছ, সে দেশের দুর্নীতির মাত্রা তত কম। বাংলাদেশের প্রশাসনকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হলে রাষ্ট্রযন্ত্র জনগণের নিকট কতটুকু দায়বদ্ধ তা প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থী ও জনগণকে জানতে, অধিকার সচেতন হতে হবে। তাই বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের কলেজগুলোতে লোকপ্রশাসন বিষয়টি পড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এতে জনগণ তাদের অধিকার সচেতন হবে এবং একই সাথে বেকারত্বের হার কমবে। তাই লোকপ্রশাসন বিষয়কে শিক্ষা ক্যাডারে স্বতন্ত্র কোডে অন্তর্ভুক্ত করা শুধু এই বিভাগের শিক্ষার্থীদেরই দাবি নয়, বরং স্বচ্ছ রাষ্ট্রযন্ত্র চাওয়া প্রতিটি নাগরিকের জন্য আশাজনক।”
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, “বাংলাদেশে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনিক দক্ষতা—এই তিনটি স্তম্ভ একে অপরের পরিপূরক। অথচ বিস্ময়ের বিষয় হলো, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং আধুনিক প্রশাসনিক শিক্ষাদানকারী লোকপ্রশাসন বিভাগ এখনো সরকারি কলেজের শিক্ষা ক্যাডারে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এটি শুধু একটি বিভাগ নয়, এটি হচ্ছে রাষ্ট্রের নীতি, উন্নয়ন, প্রশাসনিক সংস্কার এবং সুশাসনের ভবিষ্যৎ স্থপতিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান বা অর্থনীতির মতো সমাজবিজ্ঞানভিত্তিক অনেক বিভাগ ইতিমধ্যেই শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত। তাই লোকপ্রশাসন বিভাগকে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা বলেন, “আমরা লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজ একত্রিত হয়েছি আমাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বৈষম্য চাই না—আমরা চাই যোগ্যতার স্বীকৃতি। লোকপ্রশাসন বিভাগকে শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে—এ দাবি আমরা বছরের পর বছর ধরে জানিয়ে আসছি। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সবচেয়ে অবহেলিত বিভাগ আমাদেরটি, অথচ এর বিষয়বস্তু ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা অত্যন্ত বেশি। নীতি প্রণয়ন, সুশাসন, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনিক দক্ষতায় আমরা যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সম্পূর্ণ যোগ্যতা আমাদের আছে।”
এসময় বিভাগের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।