রাকসু নির্বাচন পেছানোয় বাড়ি মুখী শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি:

পোষ্য কোটা ইস্যুতে অচলাবস্থার কারণে বাড়ি মুখী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে গত দুই দিনে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। বাকি যারা ক্যাম্পাসে ছিলেন রাকসু নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা আসার পর তারাও মঙ্গলবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন। এদিকে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের পূর্বঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন।

গত দুইদিন কর্মবিরতি থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির রিডিং রুম খোলা ছিল। তবে, আজ নির্ধারিত সময় সকাল ৮টায় রিডিং রুম বন্ধ থাকে। ফলে, শিক্ষার্থীরা রিডিং রুম খোলার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রিডিং রুম খোলা হয়।

আজ সকাল ৯টা থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়। বন্ধ আছে সকল বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা এবং প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম। প্রশাসন ভবনের সামনে ও বুদ্ধিজীবী চত্বরে বসে সময় কাটাচ্ছেন কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণকারীরা। বিভিন্ন ভবনের তালা খোলা হয়। তবে, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম। খাবার দোকানগুলোতে আসন ফাঁকা।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, পরিবহন মার্কেট, আমতলা, টুকিটাকি চত্বরসহ জনবহুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনা কম। ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর গেইট ও কাজলা গেইটে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ব্যাগপত্র নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন।‌

বিনোদপুর গেইটে ঐশ্বর্য বিশ্বাস বলেন, রাজশাহীতে কিছু কাজ ছিল, তাই ক্যাম্পাসে ছিলাম। যেহেতু নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা এসেছে, আর পোষ্য কোটার বিষয় সমাধান হয়নি, তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি‌। পূজার ছুটি শেষে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্যাম্পাসে ফিরব।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল বলেন, ক্লাস পরীক্ষা কিছু হচ্ছে না, আর হবে বলেও মনে হচ্ছে না। এখানে থেকে এখন আর লাভ নেই। ভাবছিলাম রাকসুতে ভোট দিয়ে বাসায় যাবো। কিন্তু রাকসুও পিছালো। সবাই চলে যাচ্ছে আমিও কাল চলে যাবো।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল বলেন, ক্যাম্পাসের যে অবস্থা মেস থেকে অলরেডি সবাই চলে যাচ্ছে। ক্লাসও হচ্ছে না, এখন আর রাজশাহী থেকে কি করি। আমার বন্ধুরা প্রায় সবাই চলে গেছে। তাই আমিও আজ বাসায় চলে যাচ্ছি।

দোকানদার সুরজ আলী বলেন, আজকে ক্যাম্পাস খোলার দিন কিন্তু তারপরও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা নেই। তেমন ব্যবসা হচ্ছে না।

এর আগে গত রোববার পোষ্য কোটা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং শেষে পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেই সঙ্গে গত শনিবারের শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। তবে কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচারের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল নানা উত্তেজনার পর রাতে নির্বাচন কমিশনের সভায় নির্বাচন ২০ দিন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর ধার্য করা হয়। কমিশন জানায়, উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে নির্বাচন পরিচালনা সম্ভব নয়। এদিকে, গতকাল রাতে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, চলমান কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।‌