কামরাঙ্গীরচরের ঐতিহাসিক বাগচাঁন খাঁ ছাতা মসজিদে দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কার্যক্রম পরিচালনাকারী পুরাতন কমিটি অবশেষে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। হাজি মনির হোসেন চেয়ারম্যানের উদ্যোগে মুসল্লী, এলাকাবাসী ও দাতা পরিবারের প্রবীণ মুরব্বিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জানা যায়, ১৯৯২ সাল থেকে গঠিত পুরাতন কমিটি দীর্ঘ সময় ধরে মসজিদের দাতা ও প্রতিষ্ঠাতাদের ভূমিকা অস্বীকার করে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে— তারা বিভিন্ন সময় মুসল্লী ও এলাকাবাসীর কাছে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণাও চালাতেন এবং দাতা পরিবারকে দূরে রাখতেন।
গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ পরবর্তী সময়ে হাজি মনির হোসেন চেয়ারম্যান বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে ধৈর্যের সঙ্গে সকল পক্ষের মতামত শোনেন। পর্যালোচনার পর গত ২৭ জুন ২০২৫, শুক্রবার পুরনো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন তিনি। পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট ২০২৫, শুক্রবার পুরাতন কমিটির সদস্যদের রেখে নতুনভাবে মুসল্লী ও এলাকাবাসীর প্রতিনিধিদের যুক্ত করে নতুন ও পুরাতনের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার— যখন নতুন কমিটির পরিচিতি পর্বে পুরাতন কমিটির সদস্যরা সকলের সামনে প্রতিষ্ঠাতা ও দাতাদের অস্বীকার করেন। উপস্থিত জনতার সম্মুখে হাজি মনির হোসেন চেয়ারম্যান তৎক্ষণাৎ সিএস রেকর্ড থেকে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরেন, যেখানে দেখা যায় হাজি ফৈজুদ্দিন মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা এবং লাল মিয়া-সোনা মিয়া গং প্রকৃত দাতা পরিবার, যাদের অনুদানেই ৯৫ শতাংশ জমি মসজিদের জন্য দান করা হয়।
এ সময় সভা সমাপ্ত করে চেয়ারম্যান সাহেব পুনরায় আলোচনার আশ্বাস দেন। পরে দাতা পরিবারের বর্ষীয়ান মুরব্বি, মুসল্লী ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের মাধ্যমে ১৩ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নতুন কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, পরিচিতি পর্ব ও আলোচনাসভার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর দাবি— দীর্ঘদিনের বিভাজন ও ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে এ উদ্যোগের মাধ্যমে বাগচাঁন খাঁ ছাতা মসজিদে ঐক্য ও সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।