গাজার পথে আটক হলো সব নৌযান, একটিই পৌঁছাল গন্তব্যে

আন্তর্জাতিক মানবিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে পরিচালিত Global Sumud নামের ফ্লোটিলাকে লক্ষ্য করে অনুষ্ঠিত একটি সামুদ্রিক অভিযানে সব নৌযান আটক করেছে স্থানীয় নৌবাহিনী; তবে একজাহাজ সফলভাবে বাধা টপিয়ে গাজার উপকূলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। অভিযানের সময় অনেক কর্মীকে আটক করা হয়েছে এবং নৌযানগুলোর ওপর বোর্ডিং ও তল্লাশি চালানো হয়েছে—যাতে মিশনের প্রকৃতি ও বহন করা মালামাল পরীক্ষা করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকেলে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার কোনো নৌকাই ‘সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ বা আইনসম্মত নৌ-অবরোধ লঙ্ঘন করার প্রচেষ্টা সফল হয়নি’।

অপর দিকে অভিযানে নিয়োজিত নৌবাহিনী পরিচালনাকারীরা নিরাপত্তা ও আইনগত কারণ দেখিয়ে বলেছে, ফ্লোটিলার অনেক জাহাজ সন্দেহজনক কার্যক্রমে জড়িত ছিল এবং ওই জলসীমায় তাদের অবৈধভাবে চলাচল অভিপ্রেত নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। তাই বোর্ডিং ও আটককরণ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অভিযানের সময় দুইপক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে; আটককৃতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

মিশন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক নৌযান গাজার নিকটবর্তী উপকূলে পৌঁছতে পারায় আন্তর্জাতিক মানবিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু প্রতিনিধির দাবি, এটি স্থানীয় মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী সরবরাহ পৌঁছে দেওয়ার একটি সফল প্রয়াস; অন্যরা সতর্ক করে বলছে, এই ঘটনাটি ভবিষ্যতে আরও বড় ব্যাপক সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।

গাজা থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে থাকা অবস্থায় বুধবার (১ অক্টোবর) গভীর রাতে ফ্লোটিলায় প্রথমবারের মতো সরাসরি বাধা দেয় ইসরাইলি বাহিনী। বহরের বেশ কয়েকটি জাহাজ থামিয়ে তাতে উঠে পড়ে ইসরাইলি নৌ সেনারা। বন্ধ করে দেয়া হয় নৌযান থেকে চলা সরাসরি সম্প্রচার।

ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় মোট নৌযান ছিল ৪৪টি। এগুলোতে প্রায় ৫০০ মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক রয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ম্যান্দলা ম্যান্ডেলাও আছেন।