প্রিয় নবীজি ﷺ-এর অনেক সাহাবি ধনী ছিলেন, কিন্তু তারা সেই সম্পদকে ব্যবহার করেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
সবাই চায় জীবনে কল্যাণ আসুক, রিজিক বাড়ুক, সহজে ধনী হয়ে উঠুক। কিন্তু প্রকৃত কল্যাণ ও প্রাচুর্য শুধু তাদেরই ভাগ্যে জোটে, যাদের প্রতি মহান আল্লাহ অনুগ্রহ করেন।
নিচে তুলে ধরা হলো এমন কিছু আমল, যা মানুষের জীবনকে কল্যাণময় ও প্রাচুর্যময় করে তোলে—
বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা
ইস্তেগফার মানুষের অভাব দূর করে, গুনাহ মাফ করে এবং রিজিকে বরকত আনে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন—
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّاراً*يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُمْ مِدْرَاراً*وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَلْ لَكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَلْ لَكُمْ أَنْهَاراً
“তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধি করবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান ও নদী দান করবেন।” (সূরা নূহ, আয়াত ১০-১২)
ইস্তেগফারের কিছু পঠন:
أَستَغْفِرُ اللهَ উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘ অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ উচ্চারণ : 'আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।'
অর্থ : 'আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।'
ইস্তেগফারের কিছু পঠন:
أَستَغْفِرُ اللهَ উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘ অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ উচ্চারণ : 'আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।'
অর্থ : 'আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।'
জাকাত আদায় করা
জাকাত ইসলামের একটি প্রধান স্তম্ভ। এটি শুধু ব্যক্তিগত সম্পদকে পবিত্র করে না, বরং অভাবমুক্ত সমাজ গঠনের অন্যতম উপায়।
আল্লাহ তাআলা বলেন—
اِنَّمَا الصَّدَقٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَ الۡمَسٰکِیۡنِ وَ الۡعٰمِلِیۡنَ عَلَیۡهَا وَ الۡمُؤَلَّفَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ وَ فِی الرِّقَابِ وَ الۡغٰرِمِیۡنَ وَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ ابۡنِ السَّبِیۡلِ ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ
“জাকাত কেবল ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায়কারী, নব মুসলিম, দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে সংগ্রামী ও মুসাফিরদের জন্য নির্ধারিত।”
(সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত ৬০)
হযরত আবু বকর (রা.) জাকাত আদায়ে অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আর খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আজিজের সময়ে এসে এমন অবস্থা হয়েছিল যে, জাকাত নেওয়ার মতো গরিব লোকই পাওয়া যেত না।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা
রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় রাখা।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“যে ব্যক্তি চায় তার জীবিকা বৃদ্ধি পাক এবং মৃত্যুর পরেও সুনাম থেকে যাক,
সে যেন আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করে।” (সহিহ বুখারি)
আল্লাহর কাছে দোয়া করা
রিজিকের মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ। তাই অভাব থেকে রক্ষা পেতে তাঁর কাছেই প্রার্থনা করতে হবে।
নবীজি ﷺ দোয়া শিখিয়েছেন—
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজিবল ক্বাবরি লা ইলাহা ইল্লা আংতা।’ (আবু দাউদ)
“হে আল্লাহ! আমি কুফরি ও দারিদ্র্য থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই।
হে আল্লাহ! আমি কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই। আপনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই।”
(আবু দাউদ)
অল্পে তুষ্ট থাকা
প্রাচুর্যের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই, তাই অল্পে সন্তুষ্ট থাকাই প্রকৃত ধন।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“ধনের আধিক্যই ধন নয়; প্রকৃত ধনী সেই ব্যক্তি, যার অন্তর সন্তুষ্ট।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস ৬৪৪৬)
অভাব, প্রাচুর্য, রিজিক—সবই আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
কিন্তু মানুষ যদি বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়ে, জাকাত আদায় করে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, দোয়া করে এবং অল্পে তুষ্ট থাকে—
তবে তার জীবনে আল্লাহর রহমত ও প্রাচুর্যের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়।
