স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরো রাত ওই কুকুরগুলোর দল শিশুটিকে ঘিরে রেখেছিল। কারও সামনে আসার চেষ্টা করলে সতর্ক হয়ে উঠত তারা। যেন নিজের সন্তানের মতো করেই পাহারা দিচ্ছিল নবজাতকটিকে। গভীর শীতে, অন্ধকারে, বিপদের মুখে পড়া এই ছোট্ট জীবনটিকে একা থাকতে দেয়নি তারা।
পরদিন সকালে এক নারী বাথরুমে যাওয়ার সময় কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে শিশুটিকে দেখতে পান। পাশে তখনও কয়েকটি কুকুর বসে ছিল। মানুষ কাছে আসতেই তারা ধীরে ধীরে সরে দাঁড়ায়। খবর দেওয়া হয় স্থানীয়দের। দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চিকিৎসকেরা জানান, নবজাতকটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। শরীরে গুরুতর কোনো আঘাত নেই। সময়মতো উদ্ধার হওয়ায় বড় কোনো বিপদ ঘটেনি। তবে কে বা কারা শিশুটিকে সেখানে ফেলে গেল—তা এখনো জানা যায়নি। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে আলোড়ন। একদিকে মানুষ যখন নিজের সন্তানকে ফেলে যেতে পারে, ঠিক তখনই অবলা প্রাণীরা নিঃশব্দে দায়িত্ব নিয়ে নেয় সেই ছোট্ট জীবন রক্ষার। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা আবেগে বলেন,
“যাদের আমরা প্রায়ই তাড়িয়ে দিই, আজ তারাই মানুষের চেয়েও বড় মানবিকতার পরিচয় দিল।”
এই ঘটনা শুধু একটি শিশুকে রক্ষা পাওয়ার গল্প নয়—এটি মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। চারপাশের নিষ্ঠুর বাস্তবতার মাঝেও প্রমাণ করে দিল, মমত্ববোধ শুধু মানুষের একচেটিয়া নয়। কখনো কখনো, তা নিঃশব্দে জন্ম নেয় চার পায়ের পাহারাদারদের হৃদয়েও।
