দূর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা
মরণব্যাধি কারোনাভাইরাসে পুরো বিশ্ব স্থবির। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বাংলাদেশও রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। এ অবস্থায় অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিদের কাছে পাচ্ছে না রাজশাহীর দুর্গাপুরের জনগণ। অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছেন। জনপ্রতিনিধি এবং সামাজের বিত্তবানরাও যেন তাদের কান্না শুনছেন না। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. মনসুর রহমান তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুর্গাপুর ও পুঠিয়ার জন্য ৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। এ জন্য দুর্গাপুর-পুঠিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসীন মৃধা, পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন প্রান্তিক দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, নগদ টাকা ও বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেছেন। তবে রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের সাবেক দুই ধনাঢ্য সংসদ সদস্য সংকটময় সময়ে এলাকায় নেই। তবে অনুসারীদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, নির্বাচনী এলাকায় সংকটে সাবেক দুই এমপি না আসায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আব্দুল ওয়াদুদ দারা এ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের দুই বারের সংসদ সদস্য ও ধনাঢ্য গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হলেও এলাকায় রয়েছে তার বেশ জনপ্রিয়তা। ভোটের আগে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও এখন দুঃসময়ে পাশে নেই সাবেক এই এমপি। তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। কবে ফিরবেন তা জানেন না কেউ।
এদিকে, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরেই লাপাত্তা। তিনি বর্তমানে রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। গত জাতীয় নির্বাচনে দুর্গাপুরে ভোটারদের মাঝে আসলেও সংকট মূহুর্তে দেখা মিলছে না তার। তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এই এলাকায় তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে তুঙ্গে।
আর উপজলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে অনন্ত ১১ জন চেয়ারম্যান করোনা সচেতনতায় শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করছেন। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসীন মৃধা, পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব করোনা থেকে জনগণকে রক্ষা করতে এক সপ্তাহ ধরে হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট, বাসা-বাড়িতে প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন। শনিবার সকালে পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ব্যক্তিগত সদর বাজারের বিভিন্ন মোড়ে মুখের মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লোভস বিতরণ করেছেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, মুখের মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লোভস বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের সোলেমান, আব্দুল হক ও মোহাম্মাদ আলী নামের কয়েকজন হত দরিদ্ররা জানান, এমপি ড. মনুসর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় তাদের কাছে ১০ কেজি চাল পৌছে দিয়েছে। কিন্ত সাবেক এমপিসহ আর নেতাকর্মিরা তাদের খোঁজখবর রাখছেন না। তারা বলেন, গত কয়েক দিন থেকে ঘরে বসে আছি। আতষ্কে কাজ কর্ম নেই। এজন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মিসহ সমাজের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফার মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, জেলাতে ১৭ মার্চের পোগ্রাম করে তিনি এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে আমার জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ হয়েছে। এছাড়াও (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) সহ পুরো রাজশাহীর সার্বিক খোঁজ খবর নিচ্ছি প্রতিনিয়ত। আগামী ৪ এপ্রিলের পর রাজশাহীতে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবেন বলে জানান তিনি।
