আজ ১৭ মার্চ (বুধবার)। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস।
১৭ মার্চ। জাতীয় শিশু দিবস।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯২তম জন্মবার্ষিকী। ১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন। ছাত্র বয়সেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে যোগ দেন। যার কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। ১৯৭০ এর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন দল বিজয়ী হয়েও রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারেনি। ১৯৭১ এর মার্চে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন (এর আগে থেকেও দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলে আসছিল, সংক্ষিপ্ত পরিসরে এখানে উল্লেখ করলাম না।)। ১৯৭১ এর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু এক বিশাল জনসমাবেশে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। পরবর্তীতে ১৯৭১ এর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়্যারলেসে স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেন এবং ঐ রাতেই তিনি পাকিস্তান শাসক কর্তৃক গ্রেফতার হন। এরপরই শুরু হয়ে যায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। জন্ম হয় আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রামের পর ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বরে আমরা পাই আমাদের কাংখিত বিজয়। এই মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রায় ত্রিশ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় তিন লক্ষ মা-বোন সম্ভম হারিয়েছেন। শেষপর্যন্ত ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্তিলাভ করেন। এবং তার পরবর্তীতে তিনি নিজ দেশে এসে রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন।
। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’। এতে সশরীরে পাঁচটি দেশের প্রধান ও ভিডিও বার্তায় অনেক দেশ ও সংস্থার প্রধানরা অংশ নেবেন।
এর মধ্যে ১৭ মার্চ বিকেল বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালিহ উপস্থিত থাকবেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভিডিও বার্তা দেবেন।
১৯ মার্চের অনুষ্ঠান ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন।
২২ মার্চের আয়োজন ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী উপস্থিত থাকবেন। এদিন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৪ মার্চ ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত থাকবেন। পোপ ফ্রান্সিস শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৬ মার্চের আয়োজনে ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’ অনুষ্ঠান। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদেশি অতিথি থাকবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।