
একদিকে সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া অপর দিকে নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া। এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। নদ পার হওয়ার জন্য রয়েছে খেয়াঘাট। সেখানে রশি টেনে টেনে নৌকায় পারাপার হয় ২টি ইউনিয়নের অত্যন্ত ১০ গ্রামের মানুষ। এভাবেই চলছে দীর্ঘদিন। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ আর শেষ হচ্ছে না।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়ায় কুমার নদের ঘাটে শত বছর ধরে রশি টেনে কাঠের নৌকায় পারাপার হচ্ছে ১০ গ্রামের হাজারো মানুষ। কুমার নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণের অভাবে দুর্ভোগের শেষ নেই এসব গ্রামবাসীর। জনসাধারণের দুর্ভোগ বছরের পর বছর চললেও এখানে নির্মাণ করা হয়নি সেতু।
কুমার নদের পশ্চিম পাড়ে সালথা ও পূর্ব পাড়ে নগরকান্দা উপজেলার সীমানা , মধ্যের কুমার নদ পার হওয়ার জন্য রয়েছে একটি কাঠের নৌকা। ওই জায়গায় নদের প্রস্থ প্রায় ১১০ মিটার। নদের দুই দিক কচুরিপানায় পরিপূর্ণ। নৌকা চলাচলের জন্য নদের মধ্যের কিছু জায়গা পরিষ্কার করা। মাঝি নেই, নৌকাটির দুই পাশে রশি বাঁধা।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, লোকজন নৌকায় উঠে নিজেরাই রশি টেনে পারাপার হচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, দুই শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন নারী নগরকান্দা পাড়ের ঘাটে এসে বসে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ রশি টেনে নৌকা নিতে পারবেন না। তাই তাঁরা অপেক্ষা করছেন। পরে একজন এসে রশি টেনে তাঁদের পার করে দেন।
মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি, খলিশপট্টি, মাঝারদিয়া, নারানদিয়া, মুরাটিয়া, তুঘুলদিয়া গ্রাম এবং লস্করদিয়া ইউনিয়নের কল্যাণপট্টি, আইনপুর, কুমারকান্দা ও বাগইটা— এই ১০ গ্রামের মানুষের চলাচলের এটিই সহজ পথ। নগরকান্দা উপজেলার কল্যাণপট্টি, কুমারকান্দা, আইনপুর ও বাঘুটিয়া গ্রামের তিন দিকই কুমার নদে ঘেরা। কেনাকাটা করতে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া বাজারে যেতে হয়। নৌকা ছাড়া পারাপারের অন্য কোনো পথ নেই।
নদের দুই পাড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নগরকান্দার পাড়ে রয়েছে আইনপুর দাখিল মাদ্রাসা ও আইনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সালথার পাড়ে রয়েছে মাঝারদিয়া দাখিল মাদ্রাসা, মাঝারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী খেয়া নৌকায় নদ পারাপার হয়।
এলাকার বাসিন্দারা কুমার নদের ওই ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে তাঁদের দাবি পূরণ হয়নি। ভোগান্তির মধ্য দিয়ে নদ পারাপার হচ্ছেন তাঁরা।
মাঝারদিয়া বাজার কমিটির সভাপতি সেলিম মাতুব্বর বলেন, কুমার নদের এই ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য কয়েকবার জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সেতুর অভাবে আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে নদ পার হতে হচ্ছে। কৃষিপণ্য বাজারে নিতে সবাইকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হওয়া খুবই জরুরী।
সালথার উপজেলা প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘মাঝারদিয়ায় কুমার নদের ঘাটে সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন। আমাদের কাছে ১০০ মিটার সেতুর একটি প্রকল্প আসছে। কুমার নদের ওই ঘাট মেপে দেখব, যদি সেটা ১০০ মিটার হয়, তাহলে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’