প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে ঈদ-উল-ফিতরের আগে আগামীকাল মঙ্গলবার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করবেন।প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চ্যূয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে তৃতীয় পর্যায়ের জমির দলিল ও নির্মাণকৃত গৃহসমূহের চাবি প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের কাছে ঘর হস্তান্তরের চিত্র তুলে ধরে বাসসের জেলা সংবাদদাতারা জানান-
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে চট্টগ্রামে তৃতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার জমিসহ ঘর পেতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনোয়ারা উপজেলার ৬নং বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এ কথা জানান। এ পর্যায়ে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৪৯টি পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম জেলায় প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৪৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ২০ জুন সারাদেশে ৫৩ হাজার ৩৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সরকারি অর্থায়নে ঘর দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় তৃতীয় পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ১ হাজার ২১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ঘর প্রদান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে আগামীকাল খুলনা জেলায় ১৪টি রূপসায়, ৬২টি তেরখাদায়, ৩৫টি দিঘলিয়ায়, চারটি ফুলতলায়, ৬৫টি ডুমুরিয়ায়, ৩৬টি পাইকগাছায় এবং দাকোপে ২০টি পরিবারের কাছে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে।খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার তাঁর সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ৩য় পর্যায়ে খুলনার জন্য ৫টি ধাপে সর্বমোট ৯০৬টি গৃহের বরাদ্দ পাওয়া গেছে এবং গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান আছে।
গোপালগঞ্জের ৬১২টি পরিবারকে একটি করে গৃহ ও ২শতক জমি প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. উসমান গনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথি হিসেবে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।
ঈদের আগে বগুড়ায় ৯৩০ গৃহহীন পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে জেলায় ৯৩০টি ঘর হস্তান্তর করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসাবে জয়পুরহাটের ২০৬ টি ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে তাদের স্বপ্নের নিবাস। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম।
পিরোজপুুরে মুজিবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩য় পর্যায়ের উপহারের ঘর পাচ্ছে ১ হাজার ১১১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এর মধ্যে প্রায় ৫ একর জমির উপর এই ২২৮টি গৃহ নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে এবং আগামীকাল এসব ঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তান্তর করবেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাঈফ মিজান স্মৃতি মিলনায়তনে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক চৌধুরী রওশন ইসলাম।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঈদ উপহার হিসেবে পাবনা জেলার ৩৭৩ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ স্বপ্নের ঘর। জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন প্রেস বিফিংয়ে এ তথ্য জানান। জেলা প্রশাসক জানান, ৩য় পর্যায়ে ঈদ উপহার হিসেবে আগামীকাল সারাদেশে ৩২ হাজার ৯০৪ টি গৃহ হস্তাস্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে পাবনার ৯ উপজেলা ৩৭৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। পাবনায় মোট ৬৫৪টি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অবশিষ্ঠ ঘর জুনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। এর আগে পাবনায় দুই পর্বে ১ হাজার ৪২৩ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্বোধনের ২দিন আগে দখল দেয়া হবে। বিদুৎ, রাস্তা, স্যানেটারি, পানিসহ সকল সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে নওগাঁ জেলায় ৫৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে জমিসহ তৈরী বাড়ি। জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্মসূচির তৃতীয পর্যায়ে জেলায় ৬১০টি পরিবারের অনুকুলে গৃহনির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত গৃহ নির্মাণের আওতায় ইতিমধ্যে ৫৪০টি গৃহ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭০টি’র নির্মাণ কাজ চলছে। জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান তার সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রদান করেছেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার হিসেবে আগামীকাল জেলার ৫টি উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ১৮৪ টি গৃহহীন পরিবার জমিসহ পাকা বাড়ি পাচ্ছে। ৬৯৬টি পরিবারকে জমির দলিলসহ পাকা বাড়ি উপহারের দলিল হস্তান্তর করা হবে। এবারে প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে সামান্য ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। তাই নির্মাণ ব্যয় বাড়ি প্রতি ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরগুনার খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের মাঝে আগামীকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। প্রাথমিকভাবে ২১৯ জনকে তালিকাভূক্ত করে তাদের পরিবারের পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে দুই শতাংশ জমিতে দুই রুমের পাকা ঘরের সঙ্গে রান্নাঘর, বাথরুম ও একটি বারান্দা সম্বলিত আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রত্যেক ঘরেই জ্বলবে বিদ্যুতের আলোও।