রংপুরের কাউনিয়ায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সানজিদা আক্তার ইভা নামে এক স্কুলছাত্রীর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিভুজ প্রেমের বলি হতে হয়েছে দশম শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থীকে। আট মাস আগে প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম ওরফে সায়েমের সঙ্গে প্রেমের বিচ্ছেদ ঘটে। এরই জের ধরে ছুরিকাঘাতে সানজিদাকে করে হত্যা করেন প্রেমিক সায়েম।
সানজিদা আক্তার ইভা কাউনিয়া উপজেলার কুর্শার গড়াই গ্রামের সৌদি প্রবাসী ইব্রাহীম মিয়ার মেয়ে। পাশের পীরগাছা উপজেলার বড়দরগাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়তো সে। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজ করতে থাকে।
এদিকে ওইদিন রাতে উপজেলার হরিচরণ লস্করপাড়া এলাকায় এক কিশোরীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ। এরপর সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশটি সানজিদার বলে শনাক্ত করে তার পরিবার। তার শরীরে ছুরিকাঘাতের ১৮টি চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ওই রাতেই মরদেহ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এএসপি আশরাফুল আলম বলেন, এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য সানজিদার ব্যাগে পাওয়া একটি খাতা ও সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ওরফে সায়েমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে দেওয়া জবানবন্দিতে সায়েম তার প্রেমিকা সানজিদার সঙ্গে তিন বছর আগে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে সায়েম ও সানজিদার সম্পর্ক ভেঙে গেলেও যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। এরই মাঝে গত ১৬ আগস্ট দুপুরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সায়েম সানজিদাকে নিয়ে রংপুর নগরীর শাপলা টকিজে সিনেমা দেখতে যান। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেম নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।
পরে সায়েম তার পূর্বপরিচিত আরও দুইজনের সাহায্যে কৌশলে সানজিদাকে মাহিগঞ্জে রেখে পরে সেখানে আবার মিলিত হয়। তারপর তারা পীরগাছায় তিস্তা নদীর পারে নির্মিত আলীবাবা থিম পার্কে ঘুরতে যায়, কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় সানজিদা ফিরে আসার জন্য চাপ দেয়। এরপর মধুপুর রোডের একটি ফাকা জায়গায় নিয়ে সানজিদার একাধিক প্রেম নিয়ে আবার তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সায়েমসহ তিনজন মিলে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে সানজিদাকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।