শিরোনাম

6/recent/ticker-posts

মূলা দেখিয়ে আগাচ্ছে জবির নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ, ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের


অমৃত রায়, জবি প্রতিনিধি

অনাবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আজ পার করছে প্রায় ১৯ বছরের পথ। বিশ্ববিদ্যালয় পূর্নাঙ্গ হওয়ার পূর্বেই সবগুলো হল স্থানীয়দের দখলে চলে যায়। আবাসন সুবিধার জন্য ২০১৬ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানকে আধুনিক ও যোগপোযোগী করার সিদ্ধান্ত দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নে ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় ২০১৮ সালে।

২০২০ সালের অক্টোবরে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২ বছরের জায়গায় ৫ বছর অতিবাহিত হতে চললেও তা পুরোপুরি শেষ হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে তিনবার।

গত ১৭ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটি’ এক সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঐ অবশিষ্ট ১১ দশমিক ৪০ একর জমি অনুমোদন হয়। তবে অনুমোদনের প্রায় ৫ মাস পার হতে চললেও বিশ্ববিদ্যালয়টি আজও জমি বুঝে পায়নি। এতে সীমানা নির্ধারণ না হওয়া প্রাচীরের কাজ থমকে আছে।

এছাড়া নিচু সম্পূর্ণ জমি ভরাট করে ভূমি উন্নয়নের মতো বড় কাজও থমকে আছে।
সব মিলিয়ে এ অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের রয়েছে অনেক ক্ষোভ। যারা আন্দোলন করে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের জয় হাসিল করে তারা মুখও দেখতে পায়নি আশার।

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের মাস্টারপ্লান এর ভিডিও চিত্র পুনরায় শেয়ার করা হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ হয় জবি শিক্ষার্থীদের হতাশা আর ক্ষোভের চিত্র। অধিকাংশের মন্তব্য হয় "মূলা দেখিয়ে আর কত?"। পরবর্তীতে এ ক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে অনেকে তাদের আকুতি ব্যক্ত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ তম আবর্তনের প্রাক্তন এক শিক্ষার্থী বলেন, " আমরা ক্যাম্পাসে ঢুকেই হল আন্দোলনে অংশ নেই। আমরা পাবো না জেনেও পরবর্তী প্রজন্ম যেন ভুক্তভোগী না হয় সে আশায়ই আমাদের এই আন্দোলন ছিলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্প নিয়ে জলঘোলা অবস্থা আমাদেরকে মন খারাপ কদে দিতে বাধ্য করে।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ তম আবর্তনের লতিফুল সাগর বলেন," আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে নিয়ে অনেক উৎসুক। অনেক স্বপ্ন আর পরিকল্পনাও আমাদের ছিলো। সাবেক উপাচার্যের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের যে বেশ তোর জোড় ছিলো তা পরবর্তীতে কেমন যেন মরা মরা হয়ে গেছে। আমরা হয়তো এর কোনো কাজের কোনো ফল পাবো না। তবে খুব শীগ্রই যেন আমাদের অনুজরা এর সুফল পায় সেই প্রত্যাশা করি। "

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, এখনকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিকতা অনেক বদলে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব মন্তব্য না করে প্রশাসনের কাছে এ প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চাওয়ার কথা। কতটা স্বচ্ছভাবে এগুচ্ছে কাজ সে বিষয়ে প্রত্যক্ষ সংবাদ সম্মেলন বা নথি প্রকাশ করার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় যদি এক মাস্টারপ্লান দিয়েই বার বার কাজের অগ্রগতি বুঝায় তাহলে শিক্ষার্থীদের ক্ষোব স্বাভাবিক। মেয়াদ থাকতে থাকতে কাজ শেষ করতে হবে। বার বার মেয়াদ বাড়িয়ে বাজেট বাড়িয়ে কাজ ধীর করার পায়তারা যারা করছে তাদেরকে রুখতে পারে কেবল শিক্ষার্থীরাই।