শিরোনাম

6/recent/ticker-posts

কেন হঠাৎ ভাইরাল ‘সান্ডা’


হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল মরু অঞ্চলের এক নিরীহ প্রাণী ‘সান্ডা’। কেউ মজার ছলে মিম বানাচ্ছেন, কেউ বা তথ্যভিত্তিক ভিডিও শেয়ার করে জানাচ্ছেন সান্ডার বৈশিষ্ট্য। কেউ আবার শঙ্কা প্রকাশ করছেন এর বাজার চাহিদা ও এর ফলে বন্যপ্রাণী শিকার নিয়ে। বর্তমানে ঠিক এমনই এক ট্রেন্ডিং টপিক হয়ে উঠেছে মরু অঞ্চলের এই নিরীহ প্রাণীটি। কিন্তু কেন এই প্রাণীকে নিয়ে এতো আলোচনা?

ফেইসবুক জুড়ে এখন আলোচনা, ঠাট্টা আর ইয়ার্কির বিষয় এই সান্ডার বিরিয়ানি। বেশ কয়দিন ধরেই ফেইসবুকের ট্রেন্ড হলো ‘সান্ডা’। এই সামাজিক যোগাযোগে দুই-তিন মিনিট রিলস-এ চোখ রাখলেই অন্তত ৪-৫টি ‘সান্ডা’র কন্টেন্ট-এর দেখা মিলে যাবে। বিষয়টি নিয়ে হাস্যঠাট্টাও কম হচ্ছে না। অনেক মিমও বানাচ্ছেন এই বিষয়টি নিয়ে।

সান্ডা হলো একটি টিকটিকি জাতীয় সরীসৃপ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Uromastyx। এটি দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো হলেও এর শরীর তুলনামূলক ছোট এবং এর মোটা। এর খাঁজযুক্ত লেজ আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই প্রাণীকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়—‘মাস্টিগুর’, ‘সান্ডা টিকটিকি’, কিংবা ‘কাঁটা লেজযুক্ত টিকটিকি’।

মূলত আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলে এই প্রাণীটির আবাস। এটি তৃণভোজী, অর্থাৎ গাছপালা, ফুল ও বীজ খেয়ে জীবনধারণ করে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী পোকামাকড়ও খেতে দেখা যায়।

সান্ডার তেল কী?
সান্ডার তেল মূলত একটি আয়ুর্বেদিক পণ্য। এটি তৈরি হয় ‘সান্ডা’ নামের মরুভূমি অঞ্চলের গুইসাপ (এক ধরনের মরু গিরগিটি বা মনিটর লিজার্ড) গোত্রীয় প্রাণী থেকে। ভারতে এবং পাকিস্তানে এই তেল দীর্ঘদিন ধরে আয়ুর্বেদিক পণ্য হিসেবে বিক্রি হলেও বাংলাদেশে এটি এসেছে মূলত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে।

বলা হয়, এই তেল পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়ায়, লিঙ্গের আকার বড় করে, স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং যৌন দুর্বলতা দূর করে। যদিও বিজ্ঞানসম্মতভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয়, তবুও বাজারে এর চাহিদা রয়েছে।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সান্ডা
ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কখনো সান্ডা খাননি, তবে এটি খেতে অন্যকে নিষেধও করেননি। তাই অনেক আলেম এটিকে মাকরুহ বলে বিবেচনা করেন। তবে হানাফি মাজহাবে এটি খাওয়া হারাম হিসেবে ধরা হয়। অন্য মাজহাবগুলোতে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে।

ভাইরাল হওয়ার কারণ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম অনেক সময় তুচ্ছ বিষয়কেও ভাইরাল করে তুলতে পারে, যদি তাতে থাকে কিছু চমকপ্রদ বা ‘কন্ট্রোভার্শিয়াল’ উপাদান। সান্ডাকে ঘিরে ছড়ানো নানা গল্প—যেমন, এটি ‘শক্তি বৃদ্ধিকারী’, বা এর চাহিদা নাকি বিপুল দামে আন্তর্জাতিক বাজারে—এই ধরনের দাবিই মানুষের আগ্রহ উস্কে দিচ্ছে।