কোরআনের আলোকে
পবিত্র কোরআনে অসংখ্যবার এই তাওহিদের ঘোষণা এসেছে। আল্লাহ বলেনঃ
“আর তোমার রব একমাত্র রব; তিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই; তিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।” (সূরা বাকারা: ১৬৩)
আবার আল্লাহ বলেনঃ “আমরা তোমার পূর্বে কোনো রাসূল পাঠাইনি, যাকে এই বার্তা দেওয়া হয়নি যে, ‘আমিই ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। সুতরাং শুধু আমাকেই উপাসনা করো।’” (সূরা আম্বিয়া: ২৫)
হাদিসের আলোকে
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন:
“যে ব্যক্তি অন্তর থেকে দৃঢ় বিশ্বাস সহকারে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ উচ্চারণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আরেকটি হাদিসে এসেছে: “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হল জান্নাতের চাবি।” (ইবনে মাজাহ)
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ لَا إِلٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ -এর তাৎপর্য
তাওহিদ প্রতিষ্ঠা – এটি আল্লাহর একত্ববাদকে মেনে নেওয়া ও শিরক থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার।
মানবমুক্তির বার্তা – মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করে কেবল আল্লাহর দাসত্বে নিয়ে আসে।
ইসলামের ভিত্তি – নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাতসহ ইসলামের সব আমল এই কালিমার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
আত্মশান্তির উৎস – মুমিন হৃদয়ে আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে ভয় নেই, নির্ভরতার একমাত্র জায়গা আল্লাহ।
বাস্তব জীবনে প্রয়োগ
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” শুধু মুখে উচ্চারণ নয়; এটি হৃদয়ে বিশ্বাস ও আমলে প্রতিফলিত হওয়া চাই।
ইবাদতে একত্ববাদ – নামাজ, দোয়া, কুরবানি, মান্নত সবই শুধু আল্লাহর জন্য।
জীবন পরিচালনা – লেনদেন, আচরণ, রাজনীতি, অর্থনীতি সবক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মানা।
নৈতিকতা ও আচরণ – অন্যায়, জুলুম, প্রতারণা থেকে দূরে থাকা; সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো।
আজকের বিশ্বে প্রাসঙ্গিকতা
আজ মানবজাতি নানা মতবাদ, বিভাজন ও স্বার্থসংঘাতের শিকার। “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” মানুষকে এক আল্লাহর দাসত্বে ঐক্যবদ্ধ করে; বর্ণ, জাতি, ভাষা, শ্রেণি সব বিভেদ মুছে দেয়।
শেষ পরিণতি
মৃত্যুর মুহূর্তে যিনি আন্তরিকভাবে এই বাণী উচ্চারণ করবেন, তিনি জান্নাত লাভ করবেন – এটি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুসংবাদ।
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” শুধু একটি কালিমা নয়; এটি পুরো জীবনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। যিনি অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করেন এবং আমলে প্রতিফলিত করেন, তার জন্য আল্লাহর রহমত ও জান্নাত অবধারিত। আর এই কালিমার আলোয় আলোকিত জীবনই পারে মানুষকে প্রকৃত শান্তি ও সফলতা দিতে।
