আরমান হোসেন বাদল, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর হাজারীবাগের গণকটুলি সিটি কলোনিতে প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন কুখ্যাত নারী মাদক ব্যবসায়ী সাবা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মাদক বিক্রির একটি ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। এরপর গতকাল রাতে সেনাবাহিনীর সায়েন্সল্যাব ক্যাম্পের অভিযানে তাকে আটক করা হয় এবং যাচাই-বাছাই শেষে হাজারীবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তে জানা গেছে, সাবা আগে নারায়ণগঞ্জের পতিতালয়ে থাকতেন। পরে মাদক ব্যবসায়ী দিপুকে বিয়ে করে রাজধানীর হাজারীবাগে স্থায়ী হন। অভিযোগ আছে, তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে ইয়াবা এনে গণকটুলি এলাকায় বিক্রি করে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এই অবৈধ আয়ে তিনি সেখানে দোতলা একটি বাড়ি কিনে ভাড়া দিয়েছেন এবং নিজে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সাবার মা ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক, তিনি নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের আওয়ামী লীগের এক নেতার সহযোগী ছিলেন। তাদের অভিযোগ, সাবার পরিবারের একাধিক সদস্যই মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
শুধু সাবা নয়, একই এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছেন রোজি (মনুর শালী), স্বপন ওরফে বরিশাইলা স্বপন, সাঈদ, রিপন ওরফে মাদরি রিপন, কালন ওরফে ইয়াবা কালন, আক্তার ওরফে কেরামবোর্ড আক্তার, শুখি, সাবানা, লিটন ওরফে মুরগি লিটন, ইয়াসিন, সান্ত ওরফে ইয়াবা সান্ত, জুল্লা, ইউসুফ ওরফে গালকাটা ইউসুফ, আমির ওরফে গাঁজা আমির সহ আরও অনেকে।
এই মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করছে কুখ্যাত সোর্স আমির, যিনি নিজেকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও ডিবি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে হাজারীবাগ, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় চাঁদাবাজি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোর্স আমিরকে এর আগেও হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক ও ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে এবং কেরানীগঞ্জের একটি মামলায় তিনি দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত, যা বর্তমানে বিচারাধীন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো মাদক সিন্ডিকেটের হোতা ও যোগসাজশকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।