মধ্য রাতে উত্তাল বুয়েট, ধর্ষণের অভিযোগ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শ্রীশান্ত রায় নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীদের সম্পর্কে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্য এবং ধর্ষণের স্বীকারোক্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায় বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ রাতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বহিষ্কার আদেশ জারি করেছে। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

তবে শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা শুনে অসন্তোষ প্রকাশ করে ‘না, না’ বলে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করেন। এ সময় অধ্যাপক মাসুদ বলেন, “স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আমার নেই। আমি উপাচার্যের নির্দেশক্রমে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেই তাঁর নামে মামলা করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই মামলা হবে এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যদিও প্রথমে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা ছিল, তবে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”


এদিকে অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে বুয়েট ২১ ব্যাচ ধর্ষণ ও প্রমাণের কয়েকটি মিল প্রকাশ করে।
  • "রেডডিট ব্যবহারকারী নিজেকে “বুয়েট ইইই-২১”-এর শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
  • একাধিক মন্তব্যে সে বাসইউস ব্র্যান্ডের এয়ারবাডস ব্যবহার করেন বলে উল্লেখ করেছেন। যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মেলে।
  • রেডডিট আইডি থেকে জানা যায়, সে জুন মাসে মুসটাং থেকে ছবি পোস্ট করেছেন।
  • উক্ত রেডডিট আইডির অশালীন মন্তব্যগুলির ভাষা, টোন ও লেখনশৈলী বহু সহপাঠী শনাক্ত করেছেন, যা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর স্বভাবগত লেখনভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
  • যখন বুয়েট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি-বর্জনের পক্ষে সম্মিলিত স্বাক্ষর প্রদান করেন, তখন একমাত্র সেই কাগজে স্বাক্ষর করেননি। যা তার দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলে।"
শিক্ষার্থীরা জানায়, উল্লিখিত প্রমাণ ও মিলের ভিত্তিতে আমরা দৃঢ়ভাবে সন্দেহ করছি যে আমাদের ব্যাচের শ্রীশান্ত রায়ই উক্ত রেডডিট আইডির ব্যবহারকারী এবং সে-ই সচেতনভাবে নারীদের প্রতি অশালীন, লাঞ্ছনাকর ও হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন। যদি ওর কাছ থেকে আগেও এরকম কোনো আচরণের শিকার হয়ে থাকে বা কোনো প্রমাণ থেকে থাকে, সে যেন গোপনীয়তা বজায় রেখে হলেও সেটা প্রকাশ্যে আনে।