প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পুনর্বহালের দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের

রাবি প্রতিনিধি:

প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পুনর্বহালের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের ন্যায্য দাবি তুলে ধরেন।

সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রাথমিক পর্যায়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক বাদ দেওয়া হলে শিশুদের মানসিক, নান্দনিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত হবে। তাদের দাবি, সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এসব পদ পুনর্বহাল অপরিহার্য। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

এসময় সংগীত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা বলেন, প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে আজ আমরা রাজশাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা একযোগে মাঠে নেমেছি। আমরা যুক্তির ভিত্তিতে দাবি জানাই—শিশুদের মনন ও মেধা বিকাশের জন্য প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষা অপরিহার্য। ছোটবেলা থেকেই সংগীত শিক্ষা থাকলে ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষায় বিষয়টি আরও সহজ হতো।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজ প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছি এবং এ বিষয়ে আমাদের উপাচার্যের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করব।

সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সায়লা তাসমিন বলেন, সংগীত শিক্ষক পদটি যখন থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তখন থেকেই আমরা যারা সংগীত চর্চা করি, বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছি। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করার পর এখানেই শিক্ষকতা করছি। আমাদের সংগীত বিভাগ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫টি ব্যাচের শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলভাবে কাজ করছে। অনেকে প্রশ্ন করেন, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা কি অন্যান্য বিষয়ে কাজ করতে পারে? আমি বলি— অবশ্যই পারে। সংগীত এমন একটি বিদ্যা যা মানুষের সংবেদনশীলতা, মননশীলতা ও সৃজনশীলতাকে বিকশিত করে; ফলে সংগীত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পেশায় নিজেদের দক্ষভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম।

তিনি আরও বলেন, যদি প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষক পদটি পুনর্বহাল করা হয়, তাহলে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই সংগীত চর্চার সুযোগ পাবে। এতে তাদের মধ্যে সৌন্দর্যবোধ, মানবিকতা ও সৃজনশীলতা বেড়ে উঠবে। এমনকি একটি অবলা প্রাণীকেও যদি সুন্দর সুর শোনানো হয়, তার মধ্যেও এক ধরনের অনুভূতি জাগে তাহলে শিশুদের ক্ষেত্রে সংগীতের প্রভাব কতটা গভীর হতে পারে তা সহজেই বোঝা যায়। তাই আমি মনে করি, প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষক নিয়োগ পুনর্বহাল করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ সংগীতই পারে আমাদের নতুন প্রজন্মকে শৃঙ্খলিত, সংবেদনশীল ও সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে।

উল্লেখ্য, মানববন্ধনে সংগীত বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।