এখন থেকে খুব সহজেই উদ্ধার করা যাবে বেদখল জমি

দেশে দীর্ঘদিন ধরে জমি বেদখল ও দখলবাজির অভিযোগে ভোগান্তিতে থাকা প্রকৃত মালিকদের জন্য সুখবর এসেছে। সম্প্রতি সরকার নতুন ভূমি আইন এসেছে, যার আওতায় এখন মাত্র সাত দিনের মধ্যেই ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে বেদখল জমি উদ্ধার করা যাবে।

সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দীর্ঘ আদালত প্রক্রিয়া ছাড়াই জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকেই মালিকরা তাদের জমির দখল ফিরে পেতে পারবেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আইনটি কার্যকর করতে প্রশাসন ও আদালত একযোগে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

আগে কারও জমি অবৈধভাবে দখল হলে, আসল মালিককে আদালতে দেওয়ানি মামলা করতে হতো। এসব মামলা চলত বছরের পর বছর, কখনো কখনো এক যুগ পর্যন্তও। এই দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সুযোগ নিত দখলবাজ চক্র। নতুন আইন সেই পথ বন্ধ করছে।

নতুন ব্যবস্থায় যা থাকছে:

  • বেদখল জমি উদ্ধার করতে মামলা করার প্রয়োজন নেই।
  • থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করবে।
  • তদন্তে আসল মালিকানা প্রমাণিত হলে, পুলিশ বা প্রশাসন জমির দখল ফিরিয়ে দেবে।
  • দীর্ঘদিনের বিরোধ থাকলে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করলেই সমাধান দেওয়া হবে।
  • প্রয়োজন হলে ডিসি অফিস থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমে তদন্ত ও উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

ডকুমেন্ট যাচাইয়ের পরেই জমি ফেরত:

জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করার সময় ক্রয়সূত্রে দলিল, নামজারি, খতিয়ান ইত্যাদি বৈধ কাগজপত্র জমা দিতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে দেখবেন, আবেদনকারী প্রকৃত মালিক কিনা। সত্যতা প্রমাণিত হলে বেদখলদারকে উচ্ছেদ করে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অবৈধ দখলদারদের জন্য কঠোর শাস্তি:

ভূমিদস্যুতার অভিযোগ প্রমাণিত হলে দখলদারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। এমনকি অস্ত্র বা বলপ্রয়োগ করে উচ্ছেদের চেষ্টা করলে তা “অজামিনযোগ্য অপরাধ” হিসেবে গণ্য হবে।

লিগ্যাল এইড সেন্টার: বিকল্প সমাধান পথ:

প্রতিটি জেলায় গঠন করা হয়েছে লিগ্যাল এইড অফিস। জমি-বাড়ি, ওয়ারিশ, ভাগবণ্টন বা পারিবারিক বিরোধ–সব ধরনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ এখানে মামলা ছাড়াই, টাকা ছাড়াই নিষ্পত্তি করা হবে। দুই পক্ষকে ডেকে শুনে প্রশাসন বা সরকারি আইনজীবীরা সমাধান দেবেন।