|নদী খননের নামে সরকারের ৫০ কোটি টাকা হরিলুট

সাতক্ষীরায় ২৩ কিলোমিটার বেতনা নদী খননের নামে সরকারের ৫০ কোটি টাকা তছরুপ বা হরিলুট হচ্ছে। লোক দেখানোর জন্য বিনেরপোতা ব্রীজ, ঝাউডাঙ্গা, শাল্যে কাঠের ব্রীজ এলাকায় ৫-৬ কিলোমিটার দায়সারা ভাবে খনন করছে নদী খননের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদাররা। নদী খননের এই মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর শুরু হওয়া খনন কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ৩০ জুন।পানি উন্নয়ন বোড তিনটি প্যাকেজে এই্ কাজ শুরু করেছে।

স্থানীয়রা বলছে সিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। আর বর্ষা শুরু হলে কাজ বন্ধ করতে পারবে না। অসাধু পাউবো কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজসে সরকারের ৫০ কোটি টাকা নয়ছয় করবে। আর জলাবদ্ধতায় কষ্টে থাকবে সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ চার উইনিয়নের ২২ গ্রামের মানুষ।

সাতক্ষীরা শহর সংলগ্ন শাল্যে গ্রামের আবুল হোসেন ডাবলু, নজরুল ইসলাম, এহসান বাহার বুলবুল জানান, সাতক্ষীরা শহর সংলগ্ন বেতনা নদী। এক সময়ের প্রমত্তা এই নদী পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সাতক্ষীরা পৌরসভা, ঝাউডাঙ্গা, লাবসা, ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর ইউনিয়নের ২২ গ্রামের মানুষ বছরের প্রায় ছয় মাস পানি বন্ধি অবস্থায় থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে মাঠে ফসল হয় না। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে। মানুষের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করে।

সরকার এই এলাকার মানুষের জলাবদ্ধতা হাত থেকে মুক্তির জন্য ২৩ কিলোমিটার বেতনা নদী খননের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে।পাউবো তিনটি প্যাকেজে কাজ শুরু করেছে। ২০২১ সালের ১৬নভেম্বর শুরু হওয়া খনন কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ৩০জুন। কাজ শেষ হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা গ্রামের মতিযার, আবদুল্লাহ, জামাল জানান, লোক দেখানোর জন্য বিনেরপোতা ব্রীজ, ঝাউডাঙ্গা, শাল্যে কাঠের ব্রীজ এলাকায় সবমিলে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার নদী দায়সারা ভাবে খনন করেছে। বর্ষা শুরু হলে ঠিকাদারের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। আর যে টুকু খনন করেছে তাও সিডিউল মোতাবেক হয়নি।বর্ষা হলে পাড়ের মাটি ভেঙ্গে আবার ভিতরে যেয়ে নদী ভরাট হয়ে যাবে।

এসময় শাল্যে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা এস এম হাবিবুল হাসান, খলিলুর রহমান জানান, বেতনা নদী খননের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে খেয়াল খুশি মত।এই মাটি বিক্রির টাকা কতৃপক্ষের পকেটে যাচ্ছে। অসাধু পাউবো কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজসে সরকারের ৫০ কোটি টাকা নয়ছয় হচ্ছে। ফলে সরকারের এই ৫০ কোটি টাকা কোন কাজে আসবে না। আর জলাবদ্ধতায় কষ্টে থাকবে সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ চার উইনিয়নের ২২
গ্রামের মানুষ।

সাতক্ষীরা পওর বিভাগ -২ নির্বাহি প্রকৌশল শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, সরকার সাতক্ষীরা এলাকার জলাবদ্ধতা নিরাসনে কাজ করছে । ইতিমধ্যে ৪শত ৭৬ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। যার মধ্যে বেতনা নদী ৪৪ কিলোমিটারের খনন করা হবে। ইতি মধ্যে ৫০কোটি ব্যায়ে ২৩ কিলোমিটার নদী খনন কাজ শুরু হয়েছে। তিনটি প্যাকেজে খনন কাজ চলছে। খনন কাজের মেয়াদ বাড়ানো হবে । আগামি শীত মৌসুমের আগে এই নদী খনন কাজ শেষ হবে।