নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বদনজর থেকে বেঁচে থাকার কথা বলেছেন এবং এর আমলও শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা বদনজরের প্রভাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা নজরের প্রভাব সত্য।’ (ইবনে মাজাহ ৩৫০৮)
পবিত্র কোরআনেও কয়েক জায়গায় বদনজরের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাফেররা যখন উপদেশবাণী শোনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, এ তো এক পাগল’। (সুরা কলম ৫১)
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এই আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, কোরআনের এ আয়াতে ‘তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে তোমাকে আছড়ে ফেলবে’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘তোমার প্রতি বদনজর দেবে।’ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রোগী বানিয়ে দেবে, যদি আল্লাহর তোমার প্রতি হেফাজত না থাকে। আয়াতটি প্রমাণ বহন করে, বদনজরের কুপ্রভাবে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে এটা সত্য। (তাফসিরে ইবনে কাসির ৪/৪১০)
হাদিসে বদনজর থেকে বাঁচতে ঝাঁড়ফুকের পাশাপাশি দোয়ার কথাও এসেছে। আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার জিবরাঈল (আ.) রাসুল (সা.) এর কাছে এসে বলেন, হে মুহাম্মাদ (সা.)। আপনি কি রোগাক্রান্ত হয়েছেন? জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, হ্যাঁ। পরে জিবরাঈল (আ.) নিচের দোয়াটি পড়েন।
بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيْكَ وَمِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أوْ عَيْنٍ حاَسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইউয়ুজিকা ওয়া মিন সাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসাদিল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।
অর্থ: আমি আল্লাহর নামে এমন প্রতিটি জিনিস থেকে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি যা আপনাকে কষ্ট দেয়, প্রতিটি সৃষ্টিজীবের এবং প্রতিটি চোখের এবং প্রতিটি হিংসুকের অনিষ্ট থেকে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩৫২৩)
বদনজরের কুরআনি আমল
বদজনজর এড়াতে নিয়মিত কুরআনি এ আমলগুলো করা যেতে পারে। নিয়মিত কুরআনি আমলে আল্লাহ তাআলা বদনজর থেকে মুক্ত করবেন। আর তাহলো-
> সুরা ফাতিহা পড়া
> আয়াতুল কুরসি পড়া (সুরা বাকারা, আয়াত ২৫৫)
> সুরা বাকারার শেষের দুই আয়াত (২৮৫ ও ২৮৬)
> সুরা ইখলাস পড়া
> সুরা ফালাক্ব পড়া। এবং
> সুরা নাস পড়া।