
আজকের পৃথিবীতে মানুষ যখন দুনিয়ার চাকচিক্য, ক্ষমতা ও ভোগবিলাসে মগ্ন, তখন একজন মুমিনের চিন্তা হওয়া উচিত—আমার আমল কেমন? আমি কি আল্লাহর কাছে কবুল হতে পারছি? কারণ সবকিছু ফুরিয়ে যাবে, মুছে যাবে—থাকবে কেবল আমলনামা, যার ওপর দাঁড়িয়ে নির্ধারিত হবে জান্নাত না জাহান্নাম।
প্রতিদিনকার ব্যস্ততায় আমরা অনেক সময় নামাজ পড়া ভুলে যাই, কুরআন তেলাওয়াতের সময় হয় না, ভালো কথা বলাও যেন বিলাসিতা হয়ে পড়ে। অথচ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “দুনিয়া হচ্ছে মু’মিনের কারাগার এবং কাফিরের জান্নাত।” এই কথাটির মধ্যে কত গভীর বার্তা লুকিয়ে আছে—মু’মিন কখনো দুনিয়াকে কেন্দ্র করে জীবন গড়বে না, বরং আখিরাতই হবে তার চিন্তা ও প্রেরণার উৎস।
আরেকটি বিষয় হলো ইখলাস—আমল যতই বড় হোক, যদি তাতে নিয়ত বিশুদ্ধ না থাকে, আল্লাহর সন্তুষ্টি না থাকে, তাহলে সেই আমলের কোনো মূল্য নেই। হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, “আমল হলো নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। যার নিয়ত যেমন, তার প্রতিদানও তেমন।”
তাই আজ আমাদের উচিত—নিজেকে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। তাওবা করা, কাঁদা, অনুশোচনা করা, নামাজকে নিজের জীবনের কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা, কুরআনকে আবার বন্ধু বানানো, দোয়া ও যিকিরকে নিয়মিত করা। আমরা যতই দূরে চলে যাই, আল্লাহর দরজা কিন্তু কখনো বন্ধ হয় না। তিনি বলেই দিয়েছেন, “তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।” (সূরা গাফির, আয়াত ৬০)
এই দিনগুলোতে আমরা যেন অন্তত একটি পরিবর্তন আনি—অন্তরের মধ্যে আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা জাগ্রত করি। তাহলেই একদিন এই দুনিয়া ছেড়ে যাওয়ার সময় বলার মতো থাকবে, “হে আমার প্রতিপালক! আমি তাওবা করে তোমারই দিকে ফিরে এসেছি। এখন আমাকে কবুল করে নাও।"