রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ভোটারদের অর্থ প্রদানের অভিযোগ ছাত্রশিবিরের

রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ভোটারদের সরাসরি অর্থ প্রদানের অভিযোগ করেছেন ছাত্রশিবির। অভিযোগ অনুযায়ী, ১৮ সেপ্টেম্বর আরবি বিভাগ ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়, যা নির্বাচনী আচরণ বিধির লঙ্ঘন।

আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টায় রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর নির্বাচনে ছাত্রদলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি প্রদান করেন ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট' প্যানেল।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, আসন্ন রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদলের প্যানেল একাধিক ক্ষেত্রে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। এতে নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং অন্যান্য প্রার্থীদের প্রতি অসঙ্গত আচরণ প্রদর্শিত হচ্ছে। স্মারকলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা আচরণবিধির পরিপন্থীভাবে ক্লাসরুমে প্রবেশ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ১৫ সেপ্টেম্বর জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন আরবি বিভাগের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে (শহীদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবন, কক্ষ ৩০৬) প্রচারণা চালান।

এছাড়াও, ১৮ সেপ্টেম্বর আরবি বিভাগের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা প্রদান করার অভিযোগও তোলা হয়েছে। পাশাপাশি, নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং ভোটার নন এমন ব্যক্তিদের প্রচারণায় সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়েও অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, যা নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত নিয়মাবলীর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, "শুরু থেকেই কিছু প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই অনেকে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচজনের বেশি নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে না; কিন্তু দেখা গেছে, অনেক প্রার্থী বহর নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অনেকে রঙিন লিফলেট বিতরণ করেছেন এবং ক্লাসরুমের ভিতরে গিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক রাখার স্বার্থে এর আগে কোনো লিখিত অভিযোগ দিইনি। তবে আমরা আবরার ফাহাদ স্মরণে ক্যাম্পাসে নিপীড়নবিরোধী দিবস পালনের অনুমতি চেয়েছিলাম, যা নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা বলে অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু ছাত্রদল নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়াই আজ বিকেলে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি আয়োজন করেছে। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।"

এ বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, "কয়েকবার নির্বাচন পেছানোর কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে প্রশাসন ক্যাম্পাসে যে অস্থিরতা ছিল, তার মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে অনেকগুলোরই সমাধান করেছে। নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে অতিরিক্ত বাজেট প্রয়োজন হবে, তাই সকল প্রার্থীদেরও অতিরিক্ত খরচ লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা ১৬ তারিখে নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।"