শিরোনাম

6/recent/ticker-posts

স্বাস্থ্যখাতে ভয়াবহ সংকট: এক বছর ধরে বেতনহীন ২৫ হাজার কর্মী


ঢাকা, ৬ জুলাই ২০২৫:

দেশের স্বাস্থ্যখাত আজ এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। ২০২৪ সালের জুনে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (HPNSP)’ এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই, দেশের প্রায় ২৫ হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও কারিগরি জনবল বিনা বেতনে কাজ করে চলেছেন। মানবেতর জীবনযাপন করছেন এই কর্মীরা—যারা এক সময় সরকারের স্বাস্থ্যসেবার মূল চালিকাশক্তি ছিলেন।

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. ফুরজানা পারভীন-এর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ সংকট নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে।

এদের কেউ কেউ এখনও মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন, কেউ কেন্দ্রে রিপোর্ট দিচ্ছেন—তবুও নেই কোনো সম্মানী বা নিশ্চিত ভবিষ্যৎ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থা কেবল অবিচার নয়, বরং এটি রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনার একটি প্রকট উদাহরণ।

সূত্র জানায়, তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব ডা. মো. সৈয়দুর রহমানের একতরফা ও অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তেই বন্ধ হয়ে যায় দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে চলমান এই সেক্টর কর্মসূচি। কোনো মূল্যায়ন ছাড়াই প্রোগ্রাম বন্ধ করার ফলে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নেমে এসেছে এক ধরনের স্থবিরতা। টিকা সরবরাহে অনিয়ম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা ব্যাহত হওয়া, শিশু বিকাশ কর্মসূচির স্থবিরতা প্রভৃতি সংকট ইতোমধ্যে লক্ষণীয়।

সরকার ২০২৪-২০২৬ সময়কালের জন্য একটি ট্রানজিশনাল এক্সিট প্ল্যান ঘোষণা করলেও, বাস্তবে এর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (DPP) এখনও একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন,
“আমরা দেশের জন্য কাজ করেছি। এখন আমাদের মূল্য নেই। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।”

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন:
  • তৎকালীন সচিব ডা. মো. সৈয়দুর রহমানের সিদ্ধান্তের তদন্ত ও জবাবদিহি।
  • প্রধান উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কার্যকর হস্তক্ষেপ।
  • এক বছর ধরে বেতনহীন থাকা কর্মীদের দ্রুত সম্মানী প্রদান।
  • AMC-এর দক্ষ জনবলকে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তকরণ।
  • অভিজ্ঞ জনবলকে পুনর্বহাল ও মর্যাদাসম্পন্ন পদে পুনর্বিন্যাস।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই সংকট অব্যাহত থাকলে দেশের স্বাস্থ্যখাত আরও গভীর ধসের মুখে পড়বে। তারা সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় কামনা করছেন এবং ২০২৪ সালের "বৈষম্যবিরোধী ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার" অনুযায়ী দ্রুত সমাধান দাবি করছেন।